- লড়াই করে হেরেছে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ
- অস্তিত্ব সংকটে বিএনপি
নিজস্ব প্রতিবেদক : সখীপুরে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গত ২৮ মে অনুষ্ঠিত পঞ্চম ধাপের নির্বাচনে সখীপুর উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের জয়জয়কার হয়েছে। যদিও বিএনপি, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনেছিলেন। শঙ্কা-উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে শেষ পর্যন্ত অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের কাছে কোনো ধরনের অভিযোগ দিতে পারেননি প্রার্থীরা। নির্বাচনের আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। ছয়টি ইউপির পাঁচটিতে আ.লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও একটিতে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন- আ.লীগ মনোনীত কালিয়া ইউনিয়নে এসএম কামরুল হাসান ওরফে হারেজ বিএসসি, যাদবপুরে একেএম আতিকুর রহমান, হাতীবান্ধায় মো. গিয়াস উদ্দিন, বহুরিয়াতে গোলাম কিবরিয়া সেলিম, কাকড়াজানে তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ ও বহেড়াতৈল ইউনিয়নে আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম ফেরদৌস। নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করার লক্ষ্যে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল জানিয়ে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম রফিকুল ইসলাম ‘সখীপুর বার্তা’কে বলেন, ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে এক ধরনের গুজব ছিলো; আদৌ সুষ্ঠু নির্বাচন হবে কিনা, এসব আশঙ্কা থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু করার প্রয়াসে সখীপুর উপজেলাকে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা চাঁদরে ঢেকে দেওয়া হয়েছিল। ভোটের ব্যবধান : ১নং কাকড়াজান ইউনিয়নে তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ ৮ হাজার ৯৯২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুলাল হোসেন
(আনারস) পেয়েছেন ৬ হাজার ৭২২ ভোট। ২নং বহেড়াতৈল ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী গোলাম ফেরদৌস (আনারস) ৫ হাজার ১১৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষক শ্রমিক জনতালীগের প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান (গামছা) পেয়েছেন ৪ হাজার ৭৫৭ ভোট। ৬ নং কালিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এসএম কামরুল হাসান ১১ হাজার ২৬৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। চশমা প্রতীকে ৮ হাজার ৭১৩ ভোট পেয়ে তাঁর নিকটতম হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো.জামাল মিয়া। ৪ নং যাদবপুর একেএম আতিকুর রহমান আতোয়ার আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হয়ে ৭ হাজার ৫৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফিজুর রহমান পলাশ (আনারস) ৩ হাজার ৭৪১ ভোট পেয়েছেন। ৫নং হাতীবান্ধা ইউনিয়নে ১২ হাজার ৩৪৫ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. গিয়াস উদ্দিন বিজয়ী হয়েছেন। কৃষক শ্রমিক জনতালীগ মনোনীত প্রার্থী আতাউর রহমান (গামছা) ৬ হাজার ৯০৩ ভোট পেয়ে নিকটতম হয়েছেন। ৮নং বহুরিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত গোলাম কিবরিয়া সেলিম ৮ হাজার ৮৬৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আনারস প্রতীকে ৫ হাজার ৫৭০ ভোট পেয়ে নিকটতম হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী শ্রী নিরাঞ্জন বিশ্বাস।
উপজেলার ৬ টি ইউপিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, আ.লীগ মনোনীত প্রার্থীরা প্রায় ৫০ হাজার ভোট পেয়েছেন। আ.লীগের বিদ্রোহীরা পেয়েছেন প্রায় ২০ হাজার ভোট। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে কাকড়াজান ইউনিয়নের প্রার্থী মো.আক্কাছ আলী জামানত হারিয়েছেন। হাতীবান্ধা ও বহেড়াতৈল ইউনিয়নে যথাক্রমে আতোয়ার রহমান এবং কামরুজ্জামান নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি হয়েছেন। কালিয়া ইউনিয়নের প্রার্থী আবদুল হালিম সরকার লাল প্রায় সাড়ে চার হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন । সব মিলিয়ে জনতা লীগের মনোনীত প্রার্থীরা চার ইউনিয়নে প্রায় ১৭ হাজার ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে বহেড়াতৈল ইউনিয়নের প্রার্থী মো. হুমায়ুন কবীর জামানত হারিয়েছেন। অপর ইউনিয়নগুলোতেও তেমন সম্মান জনক অবস্থান তৈরি করতে পারেননি দলটির মনোনীত প্রার্থীরা। ফলে সখীপুর উপজেলাতে দলটিতে অস্তিত্ব সংকট দেখা দিয়েছে। পাঁচটি ইউনিয়নের ভোটের ফলাফলে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা প্রায় ১০ হাজার ভোট পেয়েছেন। সখীপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।