মামুন হায়দার: গ্রামের দারিদ্র-ক্লিষ্ট, চলৎশক্তিহীন কিছু মানুষকে মাসিক সম্মানী ভাতা দেওয়া হচ্ছে। তাদেরই একজন পৌরসভা বগাপ্রতিমা গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্বা রহিজ উদ্দিন (৯০) ও অন্যজন আন্দি গ্রামের বিধবা আফাতন নেছা (৮০)। জীবন সায়াহে এসে দু’জনই হারিয়েছেন চোখের জ্যোতি। অন্যের সাহায্যে হাটাচলা করতে হয়। রহিজ উদ্দিনের ছেলে নেই, কয়েকজন মেয়ে সন্তান। শত কোটায় বয়স নিয়ে এসেছিলেন মাসিক ভাতা তুলতে। জানালেন দানবীর সালাউদ্দিন আলমগীরের অবদানে আজকে টাকা-পয়সা পেয়ে ভালোভাবে দিনপাত চালাচ্ছেন, ওষুধ কিনছেন। মাস মাস বয়স্ক ভাতা পেয়ে তিনি সালাউদ্দিন আলমগীরের জন্য মঙ্গল কামনা করেন। বিধবা আফাতন নেছারও একই বুলি। সন্তানরা ভরণ-পোষনের খবর রাখেনা। ভাতার টাকা পেয়েই তার জীবন চলছে। জীবনের বাকি দিনও ভাতা পাওয়ার আশা জানিয়ে তিনি দানবীরের মঙ্গলার্থে প্রার্থনা করে বলেন-‘এ্যাই বেটাকে (সালাউদ্দিন আলমগীর) বাচাঁইয়া রাখুক আল্লাায় (আল্লাহ)।’ এভাবেই জানালেন বৃহস্পতিবার বয়স্ক ভাতা নিতে আসা ভাতাভোগী অন্যরাও। সালাউদ্দিন আলমগীর সিআইপি। একজন দানবীর হিসেবে তাঁর পরিচয় সমধিক। তিনি লাবীব গ্রুপের চেয়ারম্যান। মধুমতি ব্যাংক ও এফবিসিআই-এর পরিচালক। বাংলাদেশ ডাইং এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট। রপ্তানীতে পেয়েছেন স্বর্ণপদক। দরিদ্র জনগোষ্ঠির কল্যাণসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নে তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে কাজ করে যাচ্ছেন। মহতী কাজের জন্য তিনি নিজ নামেই গড়ে তুলেছেন ‘সালাউদ্দিন আলমগীর ফাউন্ডেশন’। এই ফাউন্ডেশনের মাধ্যমেই ইতোমধ্যে সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌরসভা ও আশ-পাশ এলাকার দু:স্থ ও অসহায় পরিবারের জন্য বয়স্কভাতা চালুসহ নানা সমস্যা রোধে তিনি নিজ উদ্যোগে সামাজিক কর্মকান্ড করে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি মসজিদ, মন্দির, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা রেখে চলেছেন। মানুষের দু:খে নিজেকে সামিল করতে আরোও নানামুখি কর্ম পরিকল্পনা রয়েছে বলে ওই ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, সখীপুর উপজেলার বেতুয়া গ্রামের বিশিষ্ট শিল্পপতি সালাউদ্দিন আলমগীর সিআইপি এলাকার আর্ত সামাজিক উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকার যে কোন সমস্যা শুনা মাত্র সবার আগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি।
তিনি মসজিদ, মন্দির, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার উন্নয়নে অগ্রনী ভূমিকা রেখে চলেছেন। বেতুয়াতে সালমা-ফাতেমা কওমী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা (নির্মাণাধীন), বেতুয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে সালমা বেগম একাডেমিক ভবন নির্মাণ, বেতুয়া পশ্চিম পাড়াতে পাকা মসজিদ নির্মাণ, প্রতিমাবংকীতে স্টারলাইট প্রি-ক্যাডেট স্কুল প্রতিষ্ঠা, সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের পাকা মসজিদ নির্মাণ উল্লেখযোগ্য। প্রায় ৫ বছর আগে থেকে চালু করেছেন গ্রামের দু:স্থ ও অসহায় পরিবারের জন্য বয়স্কভাতা কার্ড। কার্ডধারী ৩’শ বয়স্ক নারী-পুরুষকে মাসিক ১০০০ টাকা ভাতা প্রদান করা হয় সালাউদ্দিন আলমগীর ফাউন্ডেশন থেকে। বৃহস্পতিবার সখীপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় তিনি উপস্থিত থেকে ভাতা তুলে দেন কার্ডধারী ভাতাভোগীদের মাঝে। এ সময় তার সহধর্মিণী সালাউদ্দিন আলমগীর ফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মধুমতি ব্যাংকের পরিচালক সুলতানা জাহান শিখা সিআইপি, পুত্র আশহাব জাহিন আলমগীর লাবীব, ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ২০১৭ সালে বয়স্ক ভাতা প্রাপ্তদের তালিকা ৫’শতে উন্নীত হবে বলে ওই ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ হোসেন জানান। নানা জনকল্যাণমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত সালাউদ্দিন আলমগীর সিআইপির এভাবে এলাকার উন্নয়নে আরো অনেক অবদান রয়েছে বলে সুবিধাভোগী স্থানীয়রা জানিয়েছেন।