বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ৫, ২০২৩
Homeআন্তর্জাতিকআজ পবিত্র হজ

আজ পবিত্র হজ

- Advertisement -spot_img

ডেস্ক রিপোর্ট: আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ পালন করবেন বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত ২০ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলিম। মূলত হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে গতকাল বুধবার সকাল থেকে। এদিন সকাল থেকে হাজিরা এহরাম বেঁধে লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক ধ্বনি দিয়ে পবিত্র মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন। আর এর মধ্য দিয়েই শুরু হয়েছে হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা। বুধবার সকাল থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মক্কা থেকে মিনার উদ্দেশে রওনা হন। পবিত্র মিনায় লাখ লাখ মুসল্লির সমবেত কণ্ঠে ধ্বনিত হয় ‘লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’- প্রভু হে বান্দা হাজির তোমার দরবারে। ৮ জিলহজ সূর্যোদয়ের পর মক্কা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে মিনার উদ্দেশে যাত্রা করা সুন্নত হলেও যানজট এড়াতে বিপুলসংখ্যক হজযাত্রীকে মুয়াল্লিমরা সৌদি সরকারের অনুমোদনক্রমে আগের রাত থেকেই মিনায় নিয়ে থাকেন। হাজিরা মিনায় পাঁচ ওয়াক্ত কসর নামাজ আদায় করবেন এবং আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করবেন। ফজরের পর তারা আরাফাতের উদ্দেশে যাত্রা করবেন। আজ আরাফাতে হজের খুতবা শুনবেন এবং এক আজানে জোহর ও আসরের (জুহরাইন) নামাজ আদায় করবেন। সন্ধ্যায় (সূর্যাস্তের পর) তারা মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফাতের ময়দান ত্যাগ করবেন।

মুজদালিফায় পৌঁছে আবারো এক আজানে আদায় করবেন মাগরিব ও এশার নামাজ। সেখান থেকে জামারায় (প্রতীকী শয়তান) নিক্ষেপের জন্য কঙ্কর (ছোট পাথর) সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে রাত যাপনের পর ১০ জিলহজ সকালে সূর্য উদয়ের পর জামারায় পাথর নিক্ষেপের জন্য রওনা দেবেন হাজিরা।

সূর্য পশ্চিম দিকে হেলে যাওয়ার পূর্বে (দুপুরের আগে) জামারাতুল আকাবায় (বড় শয়তান) সাতটি পাথর নিক্ষেপ করবেন তারা। জামরাতুল আকাবায় পাথর নিক্ষেপের পর আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় হাজিরা পশু কোরবানি করবেন। এরপর মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম খুলে পোশাক পরবেন হাজিরা। একে তাহাল্লুলে আসগর বলা হয়।

তারপর তাওয়াফে ইফাদা (কাবাঘর তাওয়াফ) এবং সায়ী (সাফা-মারওযয়ায় সাত চক্কর) শেষ করে ফের মিনায় ফিরে যাবেন।
১১ ও ১২ জিলহজ মিনায় অবস্থান করে সূর্য হেলে পড়ার পর প্রতিদিন ছোট, মাঝারি ও বড় জামারায় পাথর নিক্ষেপ করে ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করবেন হাজিরা।

যারা ১২ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্বে মিনা ত্যাগ করতে পারবেন না, তারা ১৩ তারিখ সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত মিনায় অবস্থান করবেন এবং জামারায় ১১ ও ১২ তারিখের মতো পাথর নিক্ষেপ করবেন। এরপর একদিন মক্কায় অবস্থান করে বিদায়ী তাওয়াফ সম্পন্ন করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করবেন হাজিরা।

এবার বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশ থেকে হজ পালনে মক্কায় সমবেত হয়েছেন ২০ লক্ষাধিক মুসলমান। সৌদি সংবাদপত্র সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এদিকে হজ উপলক্ষে এবার মক্কা ও মদিনায় নজিরবিহীন নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে মিনায় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ হাজিদের ভাগ ভাগ করে সেখানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।
হজ পালনকারীদের আগমনে মিনা এখন তাঁবুর শহরে পরিণত হয়েছে। চারদিকে তাঁবু আর তাঁবু। হাজিরা এই তাঁবুতে অবস্থান করছেন। তাঁবুগুলো দেখতে চৌচালা ঘরের মতো। ভেতরে পর্যাপ্ত আলো আছে। এই তাঁবুতে শোয়া-বসা ও নামাজ পড়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে শৌচাগার ও পানির কল। আছে টেলিফোন সংযোগ।

মিনায় কিছু দূর পরপরই রয়েছে হাসপাতাল। হাজিদের সেবায় সেখানে সার্বক্ষণিক স্বাস্থ্যকর্মী, চিকিৎসক ও নিরাপত্তাকর্মী আছেন। আল্লাহর ঘরের মেহমানদের যাতে কোনোরূপ কষ্ট না হয়, সে জন্য মিনায় যাওয়ার সব রাস্তা যানজটমুক্ত রাখা হয়েছে।

উল্লেখ্য, এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন হজ পালনের উদ্দেশে মক্কায় গেছেন।

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
Must Read
- Advertisement -spot_img
আরও সংবাদ
- Advertisement -spot_img