নিজস্ব প্রতিবেদক: সখীপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ নয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে থানা হাজত থেকে ছয় জুয়াড়িকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে সখীপুর থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম হোসেন বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার সন্ধ্যায় সখীপুর থানা পুলিশের একটি দল পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাহার্তা রামখাঁ বাজার থেকে ছয় জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর তারেক ও পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এখলাছ হায়াৎ সরোয়ারসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী থানায় যায়। তারা জুয়াড়িদের ছেড়ে দিতে পুলিশকে চাপ দেয়। পুলিশ তাদের ছেড়ে দিতে অস্বীকৃতি জানালে নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে থানা হাজত থেকে জুয়াড়িদের ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পুলিশ বাঁধা দিলে এ সময় পুলিশের সঙ্গেও তাদের ধাক্কাধাক্কি হয়। পরে তারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) এসএম তুহিন আলীর কক্ষে ঢুকে তাঁর সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত শিকদার ওই কক্ষে উপস্থিত ছিলেন। শব্দ শুনে দু’তলা থেকে কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ওসি’র কক্ষে আসলে নেতাকর্মীরা দ্রুত থানা এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই রাতেই থানার ওসি (তদন্ত) গোলাম হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলেন- উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের তিন ভাতিজা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আতিক শিকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর তারেক, মুজিব কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক শিকদার, চেয়ারম্যানের ভাগ্নে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক বাবুল সিদ্দিকী, ব্যক্তিগত সহকারী জনি আহমেদ, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কেবিএম রুহুল আমিন, শ্রমিক নেতা হেলাল উদ্দিন, যুবলীগ নেতা মিলন, পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও পৌর কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক এখলাছ হায়াৎ সরোয়ার।
থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম তুহিন আলী মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসামিরা থানা হাজতের দরজা ও তালা ভেঙে জুয়াড়িদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর তারেক বলেন, ঘটনাটি সাজানো ও পরিকল্পিত। আসামি ছিনতাই চেষ্টার প্রশ্নই উঠে না। প্রকৃত ঘটনা হলো- ওসি’র সঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান আলাপ করছিলেন। এ সময় চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে গেলে পুলিশ আমাদের এক নেতাকে অযথাই মারধর করেন। পরে চেয়ারম্যান মহোদয় আমাদের নিয়ে থানা থেকে বের হয়ে আসেন। সেখানে পুলিশের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক কিছু ঘটেনি।
এ বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শওকত শিকদার বলেন, ওই সময় আমি থানায় উপস্থিত ছিলাম। সেখানে আসামি ছিনতাই চেষ্টা বা পুলিশের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক কিছু হয়নি। মামলাটি মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই নেতাকর্মীদের নামে সাজানো মামলা দেওয়া হয়েছে।