শনিবার, ডিসেম্বর ৯, ২০২৩
Homeসখীপুরসড়কের দু’পাশে পুকুর খনন হুমকিতে বড়চওনা-ধইন্যাজানি সড়ক

সড়কের দু’পাশে পুকুর খনন হুমকিতে বড়চওনা-ধইন্যাজানি সড়ক

- Advertisement -spot_img

ইসমাইল হোসেন: সখীপুর উপজেলার বড়চওনা-ধইন্যাজানি সড়কের ইন্দারজানি বাজার হতে গড়বাড়ি ত্রি-মোড় পর্যন্ত অর্ধ কিলোমিটারজুড়ে সড়কের দু’পাশে পুকুর খনন করায় ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিকল্প কোনো সড়ক না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এখন ওই সড়ক দিয়ে যান চলাচল করছে। ঝুকিঁপূর্ণ অবস্থায় থাকা সরকারি এ সড়টির দু’পাশের পাড় ভেঙ্গে পুকুরে পড়ছে। এতে দিনদিন সড়কটি ছোট হলেও বড় হচ্ছে পুকুর! এতে সড়কটির অস্তিত্ব এখন হুমকির মুখে পড়েছে। এ নিয়ে ওই সড়কে যাতায়াতকারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ রয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় সড়ক হচ্ছে বড়চওনা-ধইন্যাজানি সড়ক। সড়কটির কাজ এখন চলমান রয়েছে। ওই সড়কের ইন্দারজানি বাজার হতে গড়বাড়ি (তিন রাস্তার মোড়) ত্রি-মোড় পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে পুকুর খনন করেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সবুরসহ ওই এলাকার প্রভাবশালী আলম মিয়া, ইদ্রিস আলী, হযরত আলী, সিদ্দিক হোসেন ও শফিকুল ইসলাম নামের কয়েকজন সম্মিলিত হয়ে সড়কের দু’পাশের জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছেন। চলতি বর্ষায় বৃষ্টি হলেই সড়কের পানি গড়িয়ে পুকুরে পড়ছে আর সড়কের দু’পাড়ও ভেঙ্গে যাচ্ছে। এতে ওই সড়কটি এখন অনেকটাই ঝুকিঁপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। দু’পাশে পুকুুর থাকায় চলতি বর্ষায় সড়কটি ভেঙ্গে পুকুরের মধ্যে চলে যাওয়ায় এলাকাবাসী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এতে যে ক্রমেই ব্যাপক দুর্ভোগের শিকার হতে হবে তাদের ওই এলাকাবাসী মনির হোসেন, ফরিদুল করিমসহ অনেকেই এ প্রতিনিধিকে আক্ষেপ করেই বিষয়টি বললেন। এলাকাবাসী জানায়, এ সড়ক দিয়ে তিনটি উপজেলার লোকজন যাতায়াত করে থাকে। মালবাহী ট্রাকসহ যাত্রীবাহী বেশ কিছু যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। পাশ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার বর্গা, সরিষাআটা, পারখী,আমজানি, বিয়াইল, কস্তুরীপাড়া, বীরবাসিন্দা, রাজাপুরসহ বিভিন্ন অঞ্চলের, ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া, সাগরদিঘী, রামদেবপুর, এঙ্গারচালা, গোপীনপুর পেঁচারআটা মাকড়াইসহ বিভিন্ন অঞ্চলের এবং সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের লোকজন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে থাকে।
ওই সড়কে যাতায়াতকারী ট্রাক চালক ধীরেন চন্দ্র দাস বলেন, সড়কের দু’পাশে পুকুর থাকায় ওই জায়গাটি এখন অনেক রিস্ক হয়েছে। তাছাড়া গত সপ্তাহে ওই জায়গায় আমার ট্রাকটি উল্টে গিয়েছিল। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছিলাম!
স্থানীয় ব্যবসায়ী রিপন আহমেদ বলেন, এটি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় সড়ক হলেও ভারি যানবাহন চলাচল করা সম্ভব নয়। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওই সড়কের এক জায়গায় দু’পাশে পুকুর থাকায় সড়কের মাটি পুকুরে পড়ে গিয়ে ঝুকিঁপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এ কারণে প্রায়ই এখানে ভারী যানবাহন ফেঁেস যাচ্ছে। এখানে যেকোন সময় বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কার কথা জানান তিনি।।
সড়কের দুপাশে পুকুর খনন করে মাছ চাষকারী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সবুর ও আলম মিয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারাও সড়কটি টেকসই হবেনা বলে স্বীকার করেছেন। তারা বলেন, আমরা এ জমি লিজ নিয়ে পুকুর কেটে মাছ চাষ করছি মাত্র।
স্থানীয় কাকড়াজান ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, সড়কটি বড় হলেও ওই জায়গাটি খুবই ঝুকিঁপূর্ণ। এ অবস্থায় ভারী যানবাহন চলাচল কঠিন হচ্ছে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছি। উপজেলা প্রকৌশলী কাজী ফাহাদ কুদ্দুস বলেন, ‘ওই সড়কটি কাঁচা ছিল। ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় ১২ কিলোমিটারের সড়কটি নতুন করে পাকাকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে। ওই সড়কের অর্ধ কিলোমিটারের মধ্যে দুপাশে পুকুর খনন করা হয়েছে। ওই পুকুর ভরাট না করলে সড়কটি কোনোভাবেই ধ্বসে পড়া থেকে রক্ষা করা যাবেনা। জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে অবগত করা হয়েছে।’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী সরকার রাখী বলেন, ‘এ বিষয়ে কেউ কোন অভিযোগ করেনি। বিষয়টির ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে।’

- Advertisement -spot_img
- Advertisement -spot_img
Must Read
- Advertisement -spot_img
আরও সংবাদ
- Advertisement -spot_img