নিজস্ব প্রতিবেদকঃ করোনা ভাইরাসের কারণে শ্রমিক সংকটে পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সারা বাংলাদেশের কৃষক। এমন সময়ে স্বেচ্ছাশ্রমে কৃষকের ধান কেটে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের গড়বাড়ী বখতিয়ার পাড়ার স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা। গতকাল রবিবার সকালে ওই গ্রামের কৃষক মোঃ জসিম মিয়ার ধান কাটার মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয়। স্বেচ্ছাসেবক টিমের ১২ জন সদস্য জসিম মিয়ার ১২ শতাংশ জমির বোরো ধান কাটার মাধ্যমে এ কর্মসূচী শুরু করেন। দেশের এই ক্রান্তিকালে বিনা পারিশ্রমিকে ধানকাটা কার্যক্রম শুরু করায় খুশি হয়েছেন এলাকার কৃষকেরা। জমির মালিক জসিম বলেন, “বেশি পারিশ্রমিক দিয়েও স্থানীয় শ্রমিক পাওয়া যায়না, আবার গ্রামে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশংকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা ধানকাটা শ্রমিক বাড়িতে আনতে ভয় পাচ্ছিলাম, তাই জমির পাকাধান নিয়ে আমি চিন্তায় ছিলাম। এমন সময়ে স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা আমার জমির ধানকেটে দেওয়ায় আমি উপকৃত হলাম। আমি স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞ। স্থানীয় কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, “ধান বোনা ও ধান কাটার সময় কামলা পাওয়া যায়না। কামলার বিল দিতেই কৃষকের অনেক টাকা চলে যায়, ফলে কৃষক ধান চাষ করেও তেমন লাভবান হয়না। এমন পরিস্থিতিতে গড়বাড়ী বখতিয়ার পাড়ার স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা কৃষকদের পাশে দাঁড়ানোয় কৃষকের ধানকাটার কামলা খরচ বাঁচবে, ফলে তারা কিছুটা লাভবান হবে।” স্বেচ্ছাসেবক টিমের মডারেটর সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ আল আমিন বলেন, “করোনা ভাইরাসের কারণে আমরা বাড়িতে বেকার সময় কাটাচ্ছি। এমন সময় সারাদেশে কৃষকের ধানকাটার মৌসুম শুরু হয়েছে। আমরাও কৃষক পরিবারের সন্তান। তাই আজ সবাই মিলে স্বেচ্ছায় জসিমের জমির ধান কেটে দিলাম। গ্রামে ধানকাটা নিয়ে কেউ বিপদে পড়লে আমরা সবাই এগিয়ে যাবো।স্বেচ্ছাশ্রমে তার ধান কেটে দিয়ে আসবো।” করোনা ভাইরাসের কারণে গ্রামে আসা চাকুরিজীবী, ছাত্র, প্রবাসীদের নিয়ে গঠিত স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যরা হলেন ছুটিতে বাড়িতে আসা পুলিশ সদস্য মোমরাজ আলী শাওন, জাপানি স্কুলের শিক্ষক মোঃ এনামুল হাসান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোঃ শাহ আলম, তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী আল আমিন, সা’দত কলেজের শিক্ষার্থী দেলোয়ার ও জসিম, পিএম পাইলট কলেজের শিক্ষার্থী খাইরুল, প্রবাসী মোঃ আব্দুল্লাহসহ সাইফুল, তোফাজ্জল ও নাহিদ।
Leave a Reply