নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুরে সরকারি খাসজমি ভূমিহীন হিসেবে বন্দোবস্ত পেয়েও প্রভাবশালী এক ব্যক্তির প্রভাবে সে জমিতে দখলে যেতে পারছেন না আরিফুল ইসলাম নামের এক ভ্যানচালক। এ ব্যাপারে ওই জমি দখলমুক্ত করতে তিনি বৃহস্পতিবার বিকেলে সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী ভ্যানচালক আরিফুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার কালিয়া পাড়া ঘোনারচালা গ্রামে। তার বাবার নাম মৃত আবদুল বারেক।
জানা গেছে, আরিফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ইয়াতন ভূমিহীন হিসেবে ২০১৯ সালের ১১জুন সখীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কার্যালয় থেকে ২২ শতাংশ জমি বন্দোবস্ত পান। উপজেলার কালিয়া মৌজার ১ নম্বর দাগ ও একই খতিয়ানের ওই জমির অবস্থান। জমির বন্দোবস্ত মামলা নম্বর ১৫ (xxi) ২০১৮-২০১৯, ৮৫ (xxi)১৮-১৯ এবং টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসকের স্মারক নম্বর হচ্ছে ০৫.৩০.৯৩০০.০১২.১০০৪৫.১৪-৭৩৫(৫) তারিখ ১১.৬.২০১৯।
আরিফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী ইয়াতন নেছা জানান, ওই ২২ শতাংশ জমির দলিল পেয়ে আমরা সেখানে ঘর, টয়লেট, টিউবওয়েল নির্মাণ করেছি। ওই জমির পাশে আমাদের পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া কয়েক শতাংশ জমিও আছে। বন্দোবস্ত পাওয়া ওই জমি ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার এসে সীমানা নির্ধারণ করে দিয়ে ছিলেন সে সময়ে।
তারা জানান, প্রায় দেড় মাস আগে প্রতিবেশী হাতেম আলী নামের এক ব্যক্তি ওই ২২ শতাংশ জমি নিজের দাবি করে সিমেন্টের খুঁটি গেড়ে তাতে লোহার নেট টাঙ্গিয়ে বেড়া দিয়ে দখলে নিয়েছেন। এই জমি থেকে সরে যেতে আমাদের ওপর ব্যাপক চাপ ও প্রভাব খাটাচ্ছে। হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। টয়লেটের বেড়া ভেঙ্গে ফেলেছেন। আমাদের পরিবারের ৭ জন মানুষ খুব অসুবিধায় আছি। এ কারণে আমরা ইউএনও মহোদয়ের কাছে জমি দখলমুক্ত করতে দরখাস্ত করেছি। আরিফুল ইসলামের বৃদ্ধা মা আছিয়া বেগম (৬৫) বলেন, হাতেম আলী জবরদখল করে আমাদের সরকারিভাবে পাওয়া ওই জমিতে বেড়া দিয়েছে। আমার ছেলে, ছেলের বউ নাতি-পুতি নিয়া অনেক কষ্টে আছি। তিনি জমি দখলমুক্ত করে দিতে দাবি জানান।
এ ব্যাপারে ওই জমি দখলে নেওয়া হাতেম আলীর বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, জমি তিনি জবরদখল করেননি। ওই জমি ক্রয়সূত্রে তিনিসহ তার বাবা ও চাচার নামে রেকর্ডভুক্ত। পরবর্তীতে ওই জমির মাঠ পর্চাও হয়েছে। এসব কাগজপত্র তাদের কাছে আছে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমাউল হুসনা লিজা বলেন, ভুক্তভোগীর আবেদন পেয়ে তদন্তের জন্য উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা বলেন, ভুক্তভোগীর আবেদন পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সরকারি খাসজমি ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেওয়া হয় অনেক যাচাই-বাছাই করেই। পাবলিকের জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয়না। সরকারি জমি পাবলিকের নামে কখনো নামজারিও হবেনা। দখলে নেওয়া ওই ব্যক্তি কিভাবে ওই জমি রেকর্ডভুক্ত বা মাঠ পর্চা হয়েছে দাবি করেছেন তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।
Leave a Reply