
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুরের ৫টি ইউনিয়নে এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইউনিয়নগুলো হচ্ছে- হাতীবান্ধা, যাদবপুর, দাড়িয়াপুর, বহেড়াতৈল ও কাকড়াজান। এসব ইউনিয়নের ১০টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ ও ১৫৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোপা আমন, বীজতলা, শাক-সবজি বাগানের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কার্যালয়, প্রককৌলী কার্যালয়, কৃষি কার্যালয় ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয় থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তা মো. এরশাদুল আলম জানান, সখীপুরের বন্যাকবলিত হাতীবান্ধা, যাদবপুর, দাড়িয়াপুর, বহেড়াতৈল ও কাকড়াজান ইউনিয়নে এবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এসব ইউনিয়নে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। এতে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার, লোকসংখ্যা ও ফসলি জমির পরিমাণ নিরুপন করা হয়েছে। এদের মধ্যে ১ হাজার ৪৯৭টি পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৩৪১টি পরিবার সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬ হাজার ৯৯ জন লোক আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ১ হাজার ৩৭৬ জন লোক সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও ১৫৬ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বন্যাদুর্গত পরিবার ও লোকজনকে সরকারীভাবে ত্রাণসহায়তা দেওয়া হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ৫ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আরও বরাদ্দ পাওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নূরুল ইসলাম জানান, এবারের বন্যায় সখীপুরের ৫টি ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, জনপ্রতিপ্রতিনিধিদের নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে প্রায় ১০০ হেক্টর জমির কৃষি ফসল নষ্ট হয়েছে। এদের মধ্যে রোপা আমন ধান, বীজতলা ও শাক-সবজি। সরকারের পক্ষ থেকে বন্যা পরবতর্ী কৃষি উৎপাদনে কৃষকদের শাক-সবজির বীজ দেওয়া হবে। এছাড়াও মাষ কলাই বীজ ও সার দেওয়া হবে। এদিকে কৃষকদের রোপা আমনের বীজতলা নষ্ট হওয়া কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে ৫ একর জমিতে বীজতলা তৈরী করা হয়েছে। এছাড়াও ৪১৬টি ট্রেতে মাটি বিছিয়ে সরাসরি ধান ফেলে রোপা আমনের চারা বপন করা হয়েছে। বন্যার পানি নামার সঙ্গে রোপা আমন নষ্ট হওয়া জমিতে চারা লাগানো হবে। কৃষকদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে এসব রোপা আমনের চারা। উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী এসএম হাসান ইবনে মিজান জানান, উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে এবারের বন্যায় ২৫কিমি পাকা রাস্তা ও ৪০মিটার কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই সব এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা ও কালভার্টের তালিকা প্রস্তুত করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ পেলেই মেরামত করা হবে রাস্তা ও কালভার্টের।