নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুর উপজেলায় স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য ও তার শিক্ষক স্বামীর নেতৃত্বে একটি হোটেলের মালামালসহ আসবাপত্র ভাঙচুর করে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার বড়চওনা বাজারে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র এ ঘটনাটি ঘটে। এ সময় যাবতীয় মালামালসহ আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি হোটেলের মালিক নান্নু মন্ডল ও জমির মালিক আবদুল গফুরকে লোকজন নিয়ে মারপিট করে নারী ইউপি সদস্য নূরুন্নাহার পাপিয়া ও তার শিক্ষক স্বামী আবদুল জুব্বার।
জানা যায়, উপজেলার বড়চওনা-ছোটচওনা সড়কের বড়চওনা বাজারে ভাই ভাই হোটেলের মালিক নান্নু মন্ডল স্থানীয় জমির মালিক আবদুল গফুরের কাছ থেকে প্রায় ১৪/১৫ বছর ধরে ভাড়া নিয়ে হোটেল ব্যবসা করে আসছিলেন। কিছু দিন ধরে জমিটি নিজেদের দাবী করে আসছিলেন স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নূরুন্নাহার পাপিয়া ও তার শিক্ষক স্বামী আবদুল জুব্বার। এ নিয়ে সোমবার সকালে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে লোকজন ও লাঠিসোটা নিয়ে নারী ইউপি সদস্য ও তার শিক্ষক স্বামী হোটেলে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এ সময় বাঁধা দিলে জমির মালিক আবদুল গফুর ও হোটেল মালিক নান্নু মন্ডলের ওপর চড়াও হয় তারা। তাদের মারপিট করে হোটেলের মালামাল ও আসবাবপত্র ভাংচুর করে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। হোটেল মালিক নান্নু মন্ডল বলেন, আমি গরীব মানুষ, আমি বৈধভাবে জমির মালিক আবদুল গফুরের নিকট ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হোটেলের ব্যবসা করে আসছি। আজকে হঠাৎ তিল তিল করে গড়ে তোলা হোটেলের আসবাবপত্র আর মালামাল ভেঙ্গেচুরে আমার স্বপ্ন শেষ করে দিল। আমার প্রায় দুই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি কী দোষ করেছি। তারা ভাইয়েরা বিরোধ করলেও আমিতো ঝগড়া করি নাই। আমার ক্ষতি কেনো করা হলো। আমি এর বিচার চাই। ক্ষতিপূরণ চাই। জমির মালিক আবদুল গফুর বলেন, আবদুল জুব্বার আমার ছোট ভাই। সে উপজেলার কচুয়া পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, তার স্ত্রী নূরুন্নাহার পাপিয়া কালিয়া ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য।
আমাদের পৈত্রিক জমিজমা বড়চওনা বাজার অংশে ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছি। আমার অংশে ঘর দিয়ে ভাড়া দিয়েছি। সে ভাড়া দেওয়া হোটেল অংশের টুকুও চাচ্ছে। হোটেলের পাশেই তার অংশেরটুকুও রয়েছে। এ নিয়ে বিরোধে ছোট ভাই আর তার স্ত্রী আমাকে মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম করেছে। রাস্তা বন্ধ করে দেয়। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নারী ইউপি সদস্য নূরুন্নাহার পাপিয়া তার ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার বলেন, দুই ভাইয়ে জমি নিয়ে বিরোধে আমার স্বামী আবদুল জুব্বারকে ভাসুর আবদুল গফুর মারপিট করেছে। সে দীর্ঘদিন ধরে হার্টের রোগী। সে মারামারি করে নাই। হোটেলে ধাক্কাধাক্কি হওয়ায় কিছু আসবাবপত্র ভেঙ্গেছে। তাকে টাঙ্গাইল হাসপাতালে আজকে ভর্তি করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে এ ঘটনায় হোটেল মালিক ও জমির মালিক স্থানীয় বড়চওনা বাজার বণিক সমিতির কাছে বিচার দিয়েছে। কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম সরকার লাল, বড়চওনা বাজার বণিক সমিতির নূরুল ইসলাম তালুকদার, স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান, মোশারফ হোসেন জাফর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। কালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হালিম সরকার লাল বলেন, দুই ভাইয়ের বড়চওনা বাজার অংশের জমি ভাগবাটোয়ারার ফয়সালা আমি করে দিয়ে ছিলাম। এখন তারা এ ফয়সালা না মেনে আজকের হোটেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। স্থানীয় সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নূরুন্নাহার পাপিয়া ও তার শিক্ষক স্বামী আবদুল জুব্বারের নেতৃত্বেই এ ভাঙচুরের ঘটনাটি ঘটেছে। তবে তিনি এ বিষয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার মীমাংসার লক্ষ্যে বসা হবে জানান।
Leave a Reply