নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুর উপজেলার জমশের নগর ভি.এস.আই উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাসমত আলীর বসতবাড়ি ভাংচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন। উপজেলার বড়চওনা-ইন্দারজানি সড়কের খুংগারচালা বাজারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। শিক্ষক হাসমত আলী খুংগারচালা বাজার সংলগ্ন তার পুরাতন বসতবাড়িতে সম্প্রতি একটি চারচালা টিনের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। গত ৩ মার্চ ঘাটাইল উপজেলার ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ও সদর বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই জমিটি বনবিভাগের দাবী করে ঘরটি ভেঙ্গে দেন। এরই প্রতিবাদে বুধবার শিক্ষক নেতারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহিম হোসেন, কায়উম হুসাইন, আবুল কালাম আজাদ, আবদুল কদ্দুছ শাওন, আবদুল আজিজ, মতিউর রহমান ভূঁইয়া, শাহজাহান মিয়া, আতিকুল হক সমীর, শাহজালাল মিয়া, ফরমান হোসেন, কফিল উদ্দিন, মিজানুর রহমান লাবু, শুকুর মেলেটারি, আ. মান্নান, বিল্লাল হোসেন সজিব প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশে উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকরা যোগ দেন। বক্তারা বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যেখানে সারাদেশে ভূমি ও আশ্রয়হীনদের বসতবাড়ি নির্মাণ করে দিচ্ছেন সেখানে একজন শিক্ষক পরিবার নিয়ে থাকার জন্য ছোট্ট একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে থাকতে পারবেনা এটা হতে পারেনা। আর ওই শিক্ষক মাত্র ৯ শতক জমিতে ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন। এই জমিটি শিক্ষক হাসমত আলীর বাপ-দাদার পূর্ব বসতভিটা। কোনো দখলীয় জমি নয়। ইন্দারজানি মৌজায় কয়েক সহস্রাধিক পরিবার ঘরবাড়ি নির্মাণ করে রয়েছেন। তাদের কারও ঘর ভাংচুর করা হয়না। তারা দাবি করেন বিশেষ সুবিধা না পাওয়ায় বনবিভাগের লোকজন নির্মিতব্য ঘরটি ভেঙ্গে দেন। তারা বনবিভাগের ধলাপাড়া রেঞ্জ কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম ও সদর বিট কর্মকর্তা জহিরুল ইসলামের অপসারণসহ বিভাগীয় শাস্তির দাবি জানান। এছাড়া ওই শিক্ষকের ঘর ভেঙ্গে দেওয়ায় ক্ষতি পূরণসহ পুনরায় ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আহবান জানান বনবিভাগের কর্মকর্তাদের প্রতি। অন্যথায় শিক্ষক নেতারা বড় ধরণের আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করবেন বলেও ওই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় সমাবেশে। এদিকে, ঘর ভেঙ্গে দেওয়ায় শিক্ষক হাসমত আলী মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক হাসমত আলী বয়সে প্রবীণ। তার তিন কন্যা সন্তান। সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে ওই সন্তানদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াচ্ছেন। আমাদের সংগঠন থেকেও তাকে সহযোগিতা করা হয়। এ ঘটনায় তিনি খুবই মর্মাহত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।