মুহাম্মদ আমিনুল ইসলাম: সখীপুর উপজেলার ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসা। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান। কিন্তু প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ৩৭ বছর পেরিয়ে গেলেও ওই প্রতিষ্ঠানে এখনো কোনো পাকা ভবন নির্মাণ হয়নি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির সাবেক ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী এবং স্থানীয়দের মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার বৃহত্তর গজারিয়া ইউনিয়নের একমাত্র ধর্মীয় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৬ সালে মাদ্রাসাটি সরকারিভাবে মান্থলি পেমেন্ট অর্ডারভুক্ত (এমপিও) হয়। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিদের সহায়তায় মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ফলাফলে সন্তোষজনক অবস্থান থাকলেও সরকারি কোনো বরাদ্দ না পাওয়ায় প্রতিষ্ঠানটির অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। জরাজীর্ণ শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের উপযোগী উন্নত পরিবেশ নেই। ওই মাদ্রাসার ছাত্র শফিকুল ইসলাম জানায়, আশপাশের বিভিন্ন স্কুলে পাকা বিল্ডিং রয়েছে। কিন্তু আমাদের মাদরাসায় টিনের ঘরে ক্লাস করি। গরমের দিনে খুব কষ্ট হয়। তাছাড়া শ্রেণি কক্ষে ধুলোবালিতে ক্লাস করতে হয় আমাদের।
অত্র মাদ্রাসার সাবেক ছাত্র সখীপুর আবাসিক মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও প্রথম আলোর সখীপুর প্রতিনিধি ইকবাল গফুর বলেন, দীর্ঘদিনের পুরোনো প্রতিষ্ঠান এটি। এতদিনেও পাকা ভবন না হওয়ার বিষয়টি খুবই দুঃখজনক । সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি মাদ্রাসাটিতে যেন দ্রুত পাকা ভবন করা হয় । অত্র মাদ্রাসা সাবেক সুপার মাওলানা মোহাম্মদ আলী আজাদ জানান, আমি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সুপারের দায়িত্ব পালন করেছি । মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার ৩৭ বছর পার হয়ে গেছে। ফলাফলে সাফল্য অর্জন করার পরেও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। মাদ্রাসাটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন না থাকায় চরম ঝুঁকি নিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মো. আব্দুর রশিদ বলেন, পাবলিক পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জন করে। মাদ্রাসা সুনামের সঙ্গে পরিচালিত হলেও কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। অধিকাংশ কক্ষে সামান্য বৃষ্টিপাত হলে পাঠদানের উপযোগী থাকে না। মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এমএ হাকিম বলেন, ইছাদিঘী দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে। এতে অবকাঠামো উন্নয়নে কোনো সরকারি অর্থ বরাদ্দ নেই। জরাজীর্ণ টিনের ঘরে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাগ্রহণ করছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. মফিজুল ইসলাম বলেন, পর্যায়ক্রমে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাকা ভবন হচ্ছে, সামনে ওই মাদ্রাসায় একটি পাকা ভবন নির্মাণের পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য এ্যাড. জোয়াহেরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত আছি । ইতোমধ্যে ঘর সংস্কারের জন্য এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে মাদ্রাসাটিতে পাকা ভবন বরাদ্দ দেওয়া হবে ।
–এসবি/সানি
Leave a Reply