নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুর উপজেলার যুগীরকোপা গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহকরা ভুতুড়ে বিলের ব্ম্বিনায় পড়েছেন। ওই গ্রামের প্রায় তিন শতাধিক গ্রাহক প্রায় এক বছর ধরে অতিরিক্ত বিল পরিশোক করে আসছেন। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে মিটার পরিবর্তন করতে হবে। গ্রাহকদের অভিযোগ, মিটার পরিবর্তন করলে পরিশোধকৃত অতিরিক্ত টাকা সমন্বয় হবেনা। বুধবার বিকেলে ওই গ্রামে সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে গ্রাহকদের এমন অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। প্রায় ৩০জন গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তাঁরা নিয়মিতভাবে মিটারে উল্লেখিত ইউনিটের তুলনায় অতিরিক্ত বিল পরিশোধ করে আসছেন।
ওই গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক আবু বকর সিদ্দিক অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এ সমস্যায় ভুগছি। এ থেকে মুক্তি পেতে প্রায় সাতমাত আগে পিডিবি’র বিদ্যুৎ সংযোগ বাদ দিয়ে আমরা পল্লী বিদ্যুতের সংযোগের জন্য আবেদন করি। কিন্তু সেখানে পিডিবি’র আপত্তির কারণে আমরা পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ পাইনি। পরে পিডিবি’র দুইজন কর্মচারী আমাদের মিটারগুলো দেখতে সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন। ওইদিন ১১২জন গ্রাহকের মিটার ও বিলের কাগজ পরীক্ষা করে ১০৭ টি মিটারে ওভার রিডিং দেখতে পান। তাঁরা ওইসব গ্রাহকের মিটারের সঙ্গে পরবর্তী বিলে সমন্বয় করার কথা দিয়ে কেটে পড়েন। কিন্তু দীর্ঘ সাতমাত পেরিয়ে গেলেও এখনও অতিরিক্ত বিল করেই যাচ্ছেন।
গ্রাহকরা আরও অভিযোগ করেন, এসব ভুতুড়ে বিলের কাগজ অফিসে নিয়ে গেলে পুরাতন মিটার পরিবর্তন করে নতুন মিটার লাগাতে বলেন। কিন্তু গ্রাহকের পরিশোধ করা অতিরিক্ত বিলের টাকা সমন্বয়ের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
ওই গ্রামের অসুস্থ ও দরিদ্র কৃষক আবদুর রশিদ মিটার রিডিং এর চেয়ে অতিরিক্ত হওয়া সত্ত্বেও গত জুন মাসে বকেয়াসহ ১৪ হাজার ৫২৮ টাকা বিল পরিশোধ করেছেন। পরিশোধের কয়েকদিন পরই তাঁর নামে পুনরায় ৩ হাজার ৭১৫ টাকার বিল এসেছে। অথচ তাঁর ঘরে চলে মাত্র দুটি বৈদ্যুতিক পাখা ও তিনটি বাল্ব। নতুন বিলের কাগজ হাতে পেয়ে তিনি হতভম্ব!
একইভাবে বিদ্যুৎ গ্রাহক নূর জামান (৭৫), আজহার আলী (৪৫), শামসুল হক (৬৭) ও নজরুল ইসলামের বিলের কাগজে দেখা যায়, তাঁরা গড় বিলের শিকার হয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে তাদের নামে ২০০ থেকে ২৫০ ইউনিটের বিল করা হচ্ছে। অথচ গত কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় কোন মিটার পাঠক যাননি। এমন অভিযোগ অধিকাংশ বিদ্যুৎ গ্রাহকের।
ক্ষুব্দ বিদ্যুৎ গ্রাহকরা জানান, তাঁরা কোথাও এর সমাধান পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সখীপুরের (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সমস্যাটি দীর্ঘদিনের, আমি কয়েক মাস আগে এখানে যোগদান করেছি। তবে সব সমস্যারই সমাধান রয়েছে। আমরা অচিরেই ওই এলাকার গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যাটির সমাধান করবো।
তিনি আরও বলেন, গড় বিল ও অতিরিক্ত বিলের ঝামেলা এড়াতে আমরা সকলকে কার্ড মিটার লাগানোর জন্য পরামর্শ দিচ্ছি।
Leave a Reply