নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুরে লিজ দেওয়ার পরও ওই জমি বেড়া দিয়ে দখলে নেওয়ার অভিযোগে জমির মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন এক লেবু চাষী। রোববার দুপুরে সখীপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে জমির মালিকের নামে প্রতারণার অভিযোগ আনেন তিনি। লিজ গ্রহিতা উপজেলার কচুয়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবদুল বাছেদের ছেলে মোফাজ্জল হোসেন। তিনি সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার মামা রফিকুল ইসলাম ও ভাতিজা আলমগীর হোসেন।
তিনি জানান, উপজেলার কচুয়া গ্রামের দেওয়ান বাড়ির পাঁচ সন্তানের কাছ থেকে গত পাচঁ বছর আগে কচুয়া মৌজার ৩৭৩৬ দাগের ২১০ শতাংশ জমি তিন লাখ টাকার দিয়ে লিজ (বন্ধক) নিয়ে লেবুর বাগান করেন। এতে খরচ হয় ১৫ লাখ টাকা। বাগানে লাগানো লেবুর চারা বড় হয়ে ফল দেয়া শুরু করেছে। বর্তমানে তিনি বাগান থেকে লেবু ও কলম চারা বিক্রি শুরু করেছেন। এর মধ্যে তার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় পুনরায় লিজ চুক্তি দেয়ার জন্য দেওয়ান বাড়ির পাচঁ ভাইকে জানান।
এরমধ্যে দুই ভাই দেওয়ান সুজাত আলী ও দেওয়ান মোজাম্মেল হক ৯০ শতাংশ লিজ চুক্তি করে দিলেও বাকি তিন ভাই দেওয়ান আবদুল জব্বার, দেওয়ান হযরত আলী ও দেওয়ান শওকত ওসমান জমি লিজ চুক্তি করে দেয়নি। পরে ওই তিন ভাই তাদের জমি মোফাজ্জলকে না জানিয়েই স্থানীয় আবু হানিফ সরকার নামের এক ব্যক্তি ও অন্য একজনের কাছে ৬০ হাজার টাকায় প্রতি শতাংশ জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।
পরে তারা লেবুর বাগানে প্রবেশের রাস্তা আটকিয়ে দিয়েছে। এতে লেবু পেঁকে বাগানে পড়েই নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া বাগানের মালিক মোফাজ্জল হোসেনের লাগানো সাইন বোর্ড ভেঙে দিয়ে সেখানে দেওয়ান লেমন গার্ডেনের সাইন বোর্ড ঝুলিয়ে দিয়েছে। ফলে বাগানের লেবু ও চারা বিক্রি করতে পারছেন না মোফাজ্জল। ফলে লাখ লাখ টাকার লেবু ও চারা নষ্ট হয়ে পড়ছে।
তিনি আরও জানান, লিজ নেওয়ার সময় রেকর্ডভুক্ত জমির কথা বলা হলেও এই জমি এখন বনবিভাগের জানতে পেরেছেন। এটি তার সঙ্গে দেওয়ান পরিবার প্রতারণা করেছে বলেও দাবি করেন। তিনি বনকর্মকর্তাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছেন বনের জমি কেনা-বিক্রি করা যাবেনা। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত মোফাজ্জল হোসেন বাদি হয়ে প্রতিকার চেয়ে এবং নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ এনে টাঙ্গাইল কোর্টে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।
জমির মালিকের চাচাতো ভাই দেওয়ান সাখাওয়াত হোসেন বলেন, লেবুর বাগানের জমি তাদের চাচাতো ভাইদের। বাপ-দাদার জমি বনের নামে রেকর্ড থাকলেও দখলে রয়েছি আমরা। লেবুর বাগানের মালিক মোফাজ্জলকে পাঁচ বছরের জন্য লিজ দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে জমি ৬০ হাজার টাকা শতাংশ দামে দুই ব্যক্তির কাছে ১১০ শতাংশ জমি বিক্রি করা হয়েছে।
জমির মালিক দেওয়ান সুজাত আলী বলেন, জমিটি আমাদের বাপ-দাদার নামে ছিল। ৬২ সনের রেকর্ডে আমাদের নাম রয়েছে। পরবর্তীতে জমি বন বিভাগের নামে রেকর্ড হয়েছে। জমি দখলেও আমরা রয়েছি। যেহেতু আমাদের জমি তাই বিক্রি করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বন বিভাগের কচুয়া বিট কর্মকর্তা শাহ আহমেদ বলেন, কচুয়ার দেওয়ান বাড়িরা বনবিভাগের বেশ কিছু জায়গা দখল করে আছে। তবে বনবিভাগের জমি লিজ বা বিক্রি করার কোন নিয়ম নেই। কেনারও বিধান নেই। বিষয়টি আমাদের উর্ধতনও কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি। বনবিভাগের জমি অবশ্যই উদ্ধারের ব্যবন্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply