
সাইফুল ইসলাম সানি: দীর্ঘদিনেও যানজট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় ধীরে ধীরে যানজটের শহরে পরিণত হচ্ছে সখীপুর। শহরের মূল সড়কে যত্রতত্র ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল পার্কিং করায় দিন দিন যানজট সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করছে। যানবাহন রাখার নির্দিষ্ট স্থান ও পৌর শহরে যানজট নিরসনের কোনো সুষ্ঠু ব্যবস্থা এবং চালকরা ট্রাফিক আইন মান্য না করায় সখীপুরবাসীর জন্য যানজট এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। ফলে সমস্যাটি স্থায়ী হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, সখীপুরে গত কয়েক বছরে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার, ট্যাফে ট্রাক্টর, পিকআপ, সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটো রিকশা, অটোভ্যান এবং মোটরসাইকেলের সংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক বর্ধিত যানবাহন রাখার জন্য শহরে নতুন কোনো পদক্ষেপ দেওয়া হয়নি। সিএনজি রাখার একটি নির্দিষ্ট স্থান থাকলেও তা মূলত সড়কঘেঁষেই।
অন্যদিকে মোটরসাইকেল ও ব্যাটারি চালিত অটোভ্যানগুলো পৌর শহরের কেন্দ্রবিন্দু মুখতার ফোয়ারা চত্বরের আশপাশের মূল সড়ক দখল করে দাঁড়িয়ে থাকে। পৌর কর্তৃপক্ষ এসব যানবাহন অবস্থানের জন্য কোনো জায়গা তৈরি করতে পারেনি। ভ্যান ও মোটরসাইকেলগুলো মূল সড়কেরই একটি অংশ দখল করে অবস্থান করে। ফলে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ যানজট।
স্থানীয়রা জানান, শহর ঘেঁষে কোনো বাইপাস সড়ক না থাকায় উত্তর-পূর্বাঞ্চল মধুপুর, গারো বাজার, সাগরদিঘী, ঘাটাইল, কুতুবপুর ও জোরদিঘীর মালবাহী ট্রাক যাতায়াত করে সখীপুর পৌর শহরের ওপর দিয়ে। এ ছাড়া ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইল অংশে যানজট সৃষ্টি হলেও ধনবাড়ি, জামালপুর, সরিষাবাড়ি, মধুপুরের বাস-ট্রাকগুলো গোড়াই-সখীপুর সড়কটিকে বাইপাস হিসেবে ব্যবহার করে। তখন সখীপুর পৌর শহরের একমাত্র সড়কটিতে যানজট আরও প্রকট আকার ধারণ করে।

শহরের জনগুরুত্বপূর্ণ স্থান মুখতার ফোয়ারা চত্বরে স্বল্প সময়ের জন্য ট্রাফিক পুলিশ থাকলেও অধিকাংশ সময়ই চালকরা আইন না মেনে অবাধে খেয়াল খুশিমতো চলাচল করে।
সরেজমিনে রোববার বেলা ১১টায় দেখা যায়, পৌর শহরের মুখতার ফোয়ারা চত্বরে যানবাহন আটকে গিয়ে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। চত্বর থেকে ঢাকার দিকের সড়কে হাসপাতাল গেট পর্যন্ত এবং কচুয়া সড়কের সৌখিনমোড় পর্যন্ত দীর্ঘ হয়েছে আটকে পড়া যানবাহনের সারি।
এ বিষয়ে সখীপুরে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের উপপরিদর্শক শফিকুল ইসলাম মোবাইল ফোনে এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি আজ টাঙ্গাইল মওলানা ভাষানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছি। বিকেলের দিকে সখীপুর ফিরবো।
তিনি আরও বলেন, সখীপুরের চালকরা ট্রাফিক আইন মান্য করতে নারাজ, তাঁরা অধিকাংশ সময়ই নিজের খেয়াল খুশিমত চলাচল করে। ট্রাফিক বিভাগের মাত্র একজন কনস্টেবল নিয়ে ওই মোড়ে দায়িত্ব পালন করা কষ্টসাধ্য। এ কারণে মাঝেমধ্যে যানজট সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জুলফিকার হায়দার কামাল লেবু বলেন, যানজটের বিষয়টি নিয়ে আমরা আইনশৃঙ্খলা সভায় বেশ কয়েকবার আলোচনা করেছি। এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকেও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- প্রতিদিন উপজেলার ১২০জন করে চালককে ট্রাফিক আইন বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এতে কিছুটা হলেও তাঁরা ট্রাফিক আইন বিষয়ে জানতে পারবে।
–এসবি/সানি