নিজস্ব প্রতিবেদকঃ সখীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলীর আমরণ অনশনকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছে এলাকাবাসী। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সখীপুর প্রেসক্লাবে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভার মুজিব কলেজমোড় এলাকার তিন মুক্তিযোদ্ধাসহ শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এসএম আমজাদ হোসেন বিএসসি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যে হাসিনা আক্তারের পক্ষ নিয়ে শুক্রবার মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী অনশন করেছেন, ওই হাসিনা আক্তার মূলত দীর্ঘদিন ধরে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডে অন্য এলাকা থেকে মেয়ে নিয়ে এসে অনৈতিক ব্যবসায় জড়িত। এসব ঘটনায় হাতেনাতে ধরা পরার পর স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়েছিল। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী ওই অনৈতিক কাজে জড়িত হাসিনার সঙ্গে মিলেমিশে এলাকার গণ্যমান্য ৫০ থেকে ৬০ জন লোকের বিরুদ্ধে ছয়টি মিথ্যা মামলা করে। গত বছরের ২৬ অক্টোবর হাসিনা ও তোরাব আলীর অনৈতিক কার্যকলাপ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসী বিশাল মানববন্ধন করে। এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে করা প্রতিটি মামলাই তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। ওইসব মামলায় নিশ্চিত পরাজয় জেনেই তিনি সখীপুর প্রেসক্লাবের সামনে আমরণ অনশনের মিথ্যা নাটক করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলীকে একঘরে করে রাখা হয়নি। সামাজিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তাঁর সামাজিক সদস্যপদ বাতিল করা হয়েছে। তবে তিনি নিয়মিত সামাজিক মসজিদেই জুমার নামাজ আদায় করেন। আমরণ অনশনে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা অবশ্যই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধাকালীন কোম্পানি কমান্ডার আবদুল মালেক, অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোকছেদ আলী মিয়া, পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. ফজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উল্লেখ্য, সমাজে একঘরে করে রাখা, মিথ্যা মামলা হামলা ও নির্যাতনের বিচার দাবিতে শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে সখীপুর প্রেসক্লাবের সামনে অনশন কর্মসূচি পালন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। অনশনে তোরাব আলী অভিযোগ করেন, প্রতিবেশী এক মহিলার বাড়িতে হামলা মামলার সাক্ষী দেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা ও হামলা চালানো হচ্ছে। তোরাব আলী সখীপুর পৌরসভার মুজিব কলেজ মোড় এলাকার বাসিন্দা। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
তবে বীর মুক্তিযোদ্ধা তোরাব আলী দাবি করেছেন, সমাজের মসজিদ কমিটির সভাপতি শেখ ফরিদ ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা আমাকে একঘরে করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁরা আমার দোকান থেকে কিছু কিনতে ও বিক্রি করতেও নিষেধ করেছেন। এ বিষয়ে আমি বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে গিয়েও কোন বিচার পাইনি। তিনি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার কাছে একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তাঁর বিরুদ্ধে করা মিথ্যা মামলা ও হামলার বিচার দাবি করেন। এদিকে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম শনিবার বিকেলে বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তিনি উভয় পক্ষের কথা শুনেন। তিনি পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু হানিফ আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম আমজাদ হোসেন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ও গণিকে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য দায়িত্ব দেন।
Leave a Reply