অনলাইন ডেস্কঃ দীর্ঘদিন পর সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও তার ছোট ভাই কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী একই মঞ্চে একত্র হয়েছেন। তাদের মাঝখানে বসে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এমপি।
আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধুর কাছে কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে লতিফ সিদ্দিকী ও কাদের সিদ্দিকী একই মঞ্চে উঠে বক্তব্য দেন।
এ অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে দুই ভাই এক মঞ্চে দেখতে নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষের আগ্রহ ছিল চোখে পড়ার মতো।
এর আগে ডিসেম্বর মাসে কালিহাতীর আউলিয়াবাদে একটি কলেজের অনুষ্ঠানে দুই ভাই একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক বিভাজনসহ নানা কারণে দুই ভাইকে প্রকাশ্যে এক মঞ্চে দেখা যায়নি।
কাদেরিয়া বাহিনীর অস্ত্র জমাদানের ৫০ বছর উদযাপন কমিটির সভাপতি এ এম এনায়েত করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ‘কাদের সিদ্দিকী ইতিহাসের গর্বিত সন্তান। মুক্তিযুদ্ধের মহামানব। যুদ্ধ শেষে বিজয়ী হয়ে তিনি এক লাখ চার হাজার অস্ত্র বঙ্গবন্ধুর কাছে জমা দিয়েছিলেন। এটি একটি বিস্ময়। বাংলাদেশ সৃষ্টিতে কাদেরিয়া বাহিনীর গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। জাতীয়ভাবে আমরা মনে করি এটি একটি ঐতিহাসিক দিন।’
তিনি আরো বলেন, ‘কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর কাছ থেকে অস্ত্র লুট করে মুক্তিযোদ্ধাদের সরবরাহ করছেন। সেই অস্ত্র দিয়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে। কাদেরিয়া বাহিনীর যোদ্ধারা আমার চেয়েও সাহসী ছিলেন।’
কাদের সিদ্দিকীকে উদ্দেশে করে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাঘ বুড়ো হয়, কিন্তু তার থাবা বুড়ো হয় না। বয়স আমাদের হতে পারে। এই ৫২ বছরে আমরা সেই ২৫/২৬ বছরের টগবগে যুবক নই। তাই ঘোলা পানিতে কেউ মাছ শিকারের চেষ্টা করবেন না।’
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সংসদ সদস্য মৃণাল কান্তি দাস বলেন, দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাকে এই অনুষ্ঠানে যোগদানের নির্দেশ প্রদান করেছেন।
তিনি কাদের সিদ্দিকীকে বঙ্গবন্ধুর সার্থক আদর্শিক পুত্র অবহিত করে বলেন, ‘আমরাও আপনাকে নিয়ে পথ চলতে চাই। ২৪ সালে যে নির্বাচন হবে সে নির্বাচনে এক বৃত্তে থাকবেন মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনারা। সার্থক পিতার সার্থক উত্তরসূরি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে লড়ব।’
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘দীর্ঘ বছর পর একই মঞ্চে দুই ভাই উপস্থিত হয়েছি। অনুষ্ঠানে সরকার থেকে আওয়ামী লীগের মৃনাল কান্তি দাশকে পাঠানো হয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডাকে তার বাসভবনে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রী আমাকে ভাই হিসেবে ডেকেছিলেন। তার সঙ্গে দীর্ঘ সময় কাটিয়েছি পরিবার নিয়ে। বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়েছে আমাদের।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হামিদুল হক মোহন, কবি বুলবুল খান মাহবুব, কবি আল মুজাহিদী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান খোকা বীরপ্রতীক, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর সহধর্মিণী নাসরিন কাদের সিদ্দিকী, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছালাম চাকলাদার প্রমুখ।