বর্ষার আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা

অনলাইন ডেস্কঃ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে একটি পাইলট প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার। এর আওতায় আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় ফিরতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে কিছু লোককে ফেরত পাঠানোর চেষ্টা চলছে। পাইলট প্রকল্পের জন্য রোহিঙ্গাদের তালিকা নিয়েও দুই দেশ কাজ করছে। বৈশ্বিক চাপ মোকাবেলায় মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষ দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কয়েক দফা উদ্যোগ ভেস্তে যাওয়ার পর এই পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে প্রত্যাবাসন শুরুর চেষ্টা চলছে। মিয়ানমারের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাইলট প্রকল্পের অধীনে প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গাদের যে তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তার যাচাই-বাছাইপ্রক্রিয়া দ্রুততম সময়ে শেষ করা হচ্ছে। পরিস্থিতি বোঝার জন্য প্রাথমিকভাবে কিছু রোহিঙ্গাকে দিয়ে এই প্রকল্প শুরু হতে পারে।

পাইলট প্রকল্পের আওতায় যে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাবে তাদের দুটি অভ্যর্থনা কেন্দ্রে স্বাগত জানানো হবে। এরই মধ্যে সেই কেন্দ্রগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। অভ্যর্থনা কেন্দ্র থেকে কয়েকটি ধাপ পার হয়ে তারা রাখাইন রাজ্যের ভেতরে যাবে। অভ্যর্থনা কেন্দ্রে স্বাগত জানানোর পর রোহিঙ্গাদের কয়েক ঘণ্টা থেকে এক দিন পর্যন্ত থাকতে হতে পারে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ট্রানজিট ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের এক সপ্তাহ থেকে এক মাস পর্যন্ত অবস্থান করতে হতে পারে। এরপর তাদের বাসস্থানে পাঠানো হবে। ট্রানজিট ক্যাম্পে কয়েক হাজার রোহিঙ্গার একসঙ্গে অবস্থান করার ব্যবস্থা থাকবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভোলকার তুর্ক সম্প্রতি জেনেভায় মিয়ানমার পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন। সেখানে মিয়ানমার ও এর রাখাইন রাজ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নানা নেতিবাচক তথ্য আছে। এর পাশাপাশি তিনি রাখাইন রাজ্যের সিতুয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক বছর পর রোহিঙ্গাদের পড়ালেখার সুযোগ পাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরেছেন।

জাতিসংঘসহ পশ্চিমা দেশগুলো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পরিবেশ নেই বলে মন্তব্য করছে। আবার প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতেও তেমন কোনো ভূমিকা রাখতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে রোহিঙ্গাদের নিয়ে চাপ বাড়ছে বাংলাদেশের ওপর।

প্রত্যাবাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রত্যাবাসন হবে বা সম্ভব এই বার্তাটি রোহিঙ্গাদের পাওয়া প্রয়োজন। ২০১৭ সালের ঢল বা তারও আগে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে প্রত্যাবাসন চুক্তি স্বাক্ষর ছাড়া কোনো অগ্রগতি হয়নি। রোহিঙ্গাদের অনেকে তৃতীয় দেশে যাওয়ার সুযোগ খুঁজছে। সীমিত পরিসরে হলেও রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া শুরু হওয়া দরকার। এতে রোহিঙ্গারা বার্তা পাবে যে তাদেরও ফিরতে হবে।

Author: Ismail Hossain

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *